চন্দ্র-সূর্য হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে অন্যতম। সময়ের ব্যবধানে পৃথক সময়ে হয়ে থাকে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ। এসব নিয়ে পবিত্র ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও করণীয় রয়েছে। সূর্যগ্রহণের সুন্নত আমল হচ্ছে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা, দোয়া করা, নামাজ পড়া এবং সাদকা করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসব আমলগুলোর মাধ্যমে সূর্যগ্রহণ অতিবাহিত করেছেন।
পবিত্র কুরআনে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে সূর্য ও চন্দ্র প্রসঙ্গ। পবিত্র কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই সত্তা, যিনি সূর্যকে কিরণোজ্জ্বল ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করেছেন।’ -(সুরা ইউনুস : ৫) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি সৃষ্টি করেছি একটি প্রজ্বলিত বাতি।’ -(সুরা নাবা : ১৩) সূর্যের আলোচনায় কোরআনুল কারিমে সব জায়গায়ই ‘প্রজ্বলিত বাতি’, ‘তেজোদীপ্ত’, ‘উজ্জ্বল জ্যোতি’, ‘চমক/ঝলক’, ‘শিখা’ বলা হয়েছে।
পবিত্র কোরআন আরো বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ চাঁদকে স্থাপন করেছেন আলোরূপে, আর সূর্যকে স্থাপন করেছেন প্রদীপরূপে।’ -(সুরা নুহ : ১৬) আরো বর্ণিত হয়েছে, ‘আর তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত, দিন, সূর্য ও চাঁদকে; এবং নক্ষত্ররাজিও তারই নির্দেশে নিয়োজিত। নিশ্চয় এতে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে অনেক নিদর্শন। -(সুরা নাহল, আয়াত ১৬)
চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় অনর্থক গল্প-গুজব, হাসি-তামাশা না করে হৃদেয়ে ভয় জাগ্রত রাখা মুমিন মুসলমানদের কর্তব্য। বিষয়টি হাদিসেও প্রমাণিত। এ কারণে আল্লাহর প্রকৃত বান্দারা সূর্যগ্রহণের সময় ভয়ে ভীত থাকেন। আবার আল্লাহর রাসুল বিশ্বনবী (সা.) সূর্যগ্রহণের সময় নামাজ পড়তেন।
হযরত আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমরা একবার বিশ্বনবী (সা.)-এর কাছে থাকাকালীন সূর্যগ্রহণ শুরু হলো। সেই সময় নবী উঠে দাঁড়ালেন এবং পরিহিত চাদর টানতে টানতে মসজিদে গেলেন। তার সঙ্গে আমরাও মসজিদে প্রবেশ করলাম। আমাদের নিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়লেন তিনি এবং সূর্যগ্রহণ ছেড়ে গেল। নবী বললেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন (সূর্য/চন্দ্র) গ্রহণ দেখবে তখন অবস্থাটি থাকা পর্যন্ত নামাজ আদায় করবে এবং দোয়ায় মশগুল থাকবে। (বুখারি)