, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ , ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


দেশে মোবাইল ব্যবহারে পুরুষদের পেছনে ফেলেছেন নারীরা

  • আপলোড সময় : ৩১-০৩-২০২৪ ১০:২২:০২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩১-০৩-২০২৪ ১০:২২:০২ পূর্বাহ্ন
দেশে মোবাইল ব্যবহারে পুরুষদের পেছনে ফেলেছেন নারীরা
বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে বেড়েছে মোবাইল ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। আর মোবাইল ব্যবহারে দেশে পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে আছে নারীরা। দিন দিন পুরুষদের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারে আগ্রহ কমছে, অন্যদিকে নারীদের আগ্রহ বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এদিকে বিবিএস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে পুরুষ মোবাইল ব্যবহারকারী ছিল ৮৬ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বছরের ব্যবধানে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে মোবাইল ব্যবহারকারী পুরুষ। অন্যদিকে, ২০২২ সালে নারী মোবাইল ব্যবহারকারীর হার ছিল ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ৬২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে নারী ব্যবহারকারী যেখানে বেড়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ, সেখানে পুরুষ ব্যবহারকারী কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।
 
এদিকে মোবাইল ফোন ব্যবহারের দিক থেকে গ্রাম ও শহরের মধ্যে ছিল বিস্তর বৈষম্য। তবে দিন দিন সেই বৈষম্য দূর হচ্ছে। বর্তমানে শহরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রামেও বাড়ছে মোবাইল-ইন্টারনেটের ব্যবহার। এমনকি বৃদ্ধির হার শহরের তুলনায় এখন গ্রামে অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, বর্তমানে শহরে কমছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার। যদিও এখনো মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী শহরে বেশি।

বিবিএসের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে মোবাইল ব্যবহারকারীর হার মোট জনসংখ্যার ৭৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালে এই হার ছিল ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ। এই হার শহরে ৮২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং গ্রামে ৭১ দশমিক ৬ শতাংশ। এই হিসাবে এখনো শহরে মোবাইলের ব্যবহার বেশি। তবে বৃদ্ধির হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি।

গত ২০২০ সালে গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার ছিল ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২৩ সালে সেটা বেড়ে হয়েছে ৭১ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ তিন বছরের ব্যবধানে প্রায় দুই শতাংশ বেড়েছে ব্যবহারকারী। আর ২০২২ সালে ছিল ৭১ শতাংশ। বছরের ব্যবধানে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।

অন্যদিকে, ২০২২ সালে শহরে মোবাইল ব্যবহারকারীর হার ছিল ৮৩ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ৮২ দশমিক ৭ শতাংশ। বছরের ব্যবধানে কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। আর ২০২০ সালে শহরে ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ মোবাইল ব্যবহারকারী ছিল। চার বছরে বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে শহরের চেয়ে গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে গ্রামে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ছিল ৪১ দশমিক ২ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ১ শতাংশ। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে গ্রামে ৫ শতাংশ হারে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। শহরে এই সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর দিক থেকেও বৃদ্ধির হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিসম্প্রতি মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার পেছনে রয়েছে অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি। অনলাইনে জুয়া খেলার হার সবচেয়ে বেশি। তথ্যপ্রযুক্তির নেতিবাচক ব্যবহার বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

এদিকে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রামের অনেকে প্রবাসে থাকে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইলের ব্যবহার বাড়ছে। একই সঙ্গে মানুষের সক্ষমতাও আগের থেকে বেড়েছে। তবে গ্রামে মোবাইল ব্যবহারকারী বাড়ার পেছনে বর্তমানে অন্যতম কারণ অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি। এ কারণে ইন্টারনেটের ব্যবহারও বেড়েছে।

তিনি বলেন, গ্রামের কিশোর-তরুণরা অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত হচ্ছে। এ ছাড়া পর্নোগ্রাফি দেখার প্রবণতাও রয়েছে। পাশাপাশি অনেকে মোবাইলে গেম খেলে। এসব কারণে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ছে। শহরে কমার বিষয়ে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের বিভিন্ন ডিভাইসের সহজলভ্যতা এবং বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে শহরে মোবাইলের ব্যবহার কম।

এদিকে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, শহরের সঙ্গে গ্রামেও ব্যবহারকারী বাড়াটা ভালো খবর। তবে গ্রামপর্যায়ে এটার নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়ছে। এখান থেকে উত্তরণে বিটিআরসিকে আমরা বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম, কিন্তু তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অ্যাকশনে গেলে আরও রক্তপাত হতো: আসিফ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অ্যাকশনে গেলে আরও রক্তপাত হতো: আসিফ