এবার আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে সাড়ে ৫ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামাসকে নির্মূলের কথা বলা হলেও ক্রমেই বাড়ছে বেসামরিক প্রাণহানি। চরম খাদ্য ঘাটতিতে গভীর হচ্ছে মানবিক সংকট। এ অবস্থায় গাজা পৃথিবীর বৃহত্তম গণকবরে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল।
যুদ্ধের আগে গাজা সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার ছিল বলেও জানান তিনি। জোসেপ বোরেল বলেন, ‘ইসরায়েল দুর্ভিক্ষকে উসকে দিচ্ছে। তারা অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। শত শত ত্রাণের ট্রাক গাজায় ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। অন্যান্য সংঘাতের তুলনায় গাজায় শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার। এ বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই।’
এদিকে গাজার খাদ্য সংকট নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকিশেন আইপিসি। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মে মাসের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ শুরু হতে পারে। উপত্যকার প্রায় ১১ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে রয়েছে বলেও জানায় সংস্থাটি, যা মোট জনসংখ্যার অর্ধেক।
আইপিসির প্রতিবেদনকে সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। তিনি বলেন, ‘আইপিসির প্রতিবেদনে বিষয়টি পরিষ্কার, উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। গাজার ফিলিস্তিনিরা ক্ষুধা ও দুর্ভোগের ভয়াবহ মাত্রা সহ্য করছে। এটি একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়। উপত্যকায় নির্বিঘ্নে ত্রাণ সরবরাহে সহায়তা করতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।
এদিকে, রাফায় হামলা চালালে তা বড় ধরনের ভুল হবে বলে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে আমেরিকা। সোমবার এক ফোনালাপে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে এ বিষয়ে সতর্ক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে উপত্যকার মানবিক সংকট আরও গভীর হবে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার ভোরে গাজার মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের রাফায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে। এর আগে আল-শিফা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ২০ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।