মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ ছিনতাইয়ের শিকার হয় বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। ওই সময় জাহাজটিতে ২৩ বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন। দস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে সাহায্য চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন এমভি আব্দুল্লাহর ক্যাপ্টেন।
ভারতীয় নৌবাহিনী শুক্রবার (১৫ মার্চ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাহায্যের আবেদন পেয়ে জাহাজটির কাছে প্রথমে তাদের একটি নজরদারি বিমান গিয়েছিল। কিন্তু ওইদিন (১২ মার্চ) বিমানটি নাবিকদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেনি। মূলত এমভি আব্দুল্লাহ থেকে কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি তাদের।
এরপর ১৪ মার্চ তাদের যুদ্ধজাহাজ ছিনতাই হওয়া জাহাজটিকে অবরুদ্ধ করে। ওই সময় নাবিকদের অবস্থান ও পরিস্থিতি নিরূপণ করে যুদ্ধজাহাজটি। কিন্তু দস্যুদের কিছু করতে পারেনি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজটি। ফলে ছিনতাই হওয়া জাহাজটির পিছু নেয় ভারতীয় নৌ সেনারা। সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত বাংলাদেশি জাহাজটির কাছাকাছি অবস্থান করে ভারতের যুদ্ধজাহাজটি।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দুপুরে শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহাজের ইন্টারনেট সংযোগও। ছিনিয়ে নেওয়া হয় নাবিকদের কাছে থাকা মোবাইল, সঙ্গে থাকা ডলার।
জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। নাবিক ও ক্রুসহ জাহাজটিতে ২৩ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটিকে ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে জলদস্যুরা। জাহাজটি ওই সময় সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল।
কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন ‘এমভি আবদুল্লাহ’ আগে ‘গোল্ডেন হক’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা। সূত্র: এনডিটিভি