দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সফল কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কাছে হয়ত কোনো জাদুর কাঠি আছে। নাহলে তিনি যেখানেই পা রাখেন সেখানেই পান সফলতার দেখা। হয়ত কোনো পরশ পাথর আছে। যে পাথরের ছোঁয়ায় বদলে দেন ক্রিকেটারদের। যার সবশেষ উদাহরণ জাকের আলী অনিক।
এদিকে সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জার্সিতে দারুণ ব্যাটিং করলেও দলকে শিরোপা জেতাতে পারেননি জাকের। তবে, ঠিকই নজর কাড়েন কোচ সালাউদ্দিনের। তাইতো বিপিএলের মাঝপথেই জাকেরকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে না রাখায় সংবাদ সম্মেলনে এসে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘জাকেরের কথাটা সবসময় আপনারা হয়ত ভুলে যান কেউ জিজ্ঞেস করেন না। ছেলেটা একটু কালো যে কারণে আমার মনে হয় বোর্ডও তাকে দেখে না ঠিকমত। দেশের জন্য আপনারা সাত নাম্বারে প্লেয়ার খোঁজেন। সে গত কয়েক বছরে খুবই ভালো খেলছে। তার স্ট্রাইকরেট যদি দেখেন সে প্রতিটা দিনই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রানটা করে দিয়ে আসে। সে অনেক সেন্সিবল। আমার মনে হয় এই ছেলেটাকে সুযোগ দেওয়া উচিত।'
এদিকে সালাউদ্দিনের সেই মন্তব্যের পরই নির্বাচকদের নজরে আসেন এই সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার। চোটের কারণে ছিটকে যাওয়া আলিস আল ইসলামের পরিবর্তে সুযোগ মিলে যায় টি-২০ দলে। আর অভিষেক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জাকের যা করেছেন, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য!
এদিকে ২০০ স্ট্রাইকরেট! ছয়টা ছক্কা, চারটা চার! কি অসাধারণ এক ইনিংসই না খেলে গেলেন জাকের আলী অনিক। জাতীয় দলের হয়ে পাওয়া সুযোগের প্রথম দিনেই জাকের নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন। বুঝিয়ে দিলেন, পরিণত হয়েই তিনি এসেছেন।
যদিও দিনটা হয়নি জাকেরের। দিনটা হয়নি বাংলাদেশের। এমন বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেও জাকেরকে হতাশ হয়ে ছাড়তে হয়েছে মাঠ। দলকে যে জয় এনে দিতে পারেননি তিনি। দলের জয়টাকে একহাত দূরত্বে রেখেই যে তিনি হেঁটেছেন প্যাভিলিয়নের পথে। তবুও, তার সেই ৬৮ রানের ইনিংস মন জিতেছে কোটি ভক্তের। সবার মুখে একটাই কথা—সালাউদ্দিন রত্ন চিনতে ভুল করেন না।