আবিদ হাসান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) থেকে: মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিভিন্ন হাট-বাজারে সকাল-দুপুরে মিলছে পদ্মানদীর ছোট সাইজের ইলিশের পোনা, যা জাটকা নামে পরিচিত। সারাবছরই জাটকা আহরণ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকলেও জেলেরা মানছে না আইন। সচেতন মহলের অনেকেই বলছে- মৎস্য অফিসের অদক্ষতা আর অবহেলায় এসব হচ্ছে। প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা নেই বলেই গত ৪/৫ মাস কোন অভিযান চোখে পড়েনি কারো কাছে।
এদিকে উপজেলা মৎস্য অফিস বলছে- তারা নিয়মিত অভিযান করছে হাট-বাজারে। এছাড়াও জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যান নিয়মিত। আর জেলেরা বলছে-আমাদের কেউ নিষেধ করেনা, আমরা গত ৬ মাস যাবৎ পদ্মানদীতে জাটকা আহরণ করছি, কোন অভিযান বা বাধা পায়নি তারা। এছাড়া, প্রশাসন নদীতে অভিযানে নামার ঘন্টাখানেক পূর্বেই আমরা জেনে যাই, তাই সুযোগ বুঝে সটকে পরার কথাও জানান তারা। সরেজমিনে পদ্মানদীর বিভিন্ন পয়েন্টে কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা আহরণ করতে দেখা গেছে। এছাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর, আন্ধারমানিক আড়ৎ এবং ঝিটকা,আন্ধারমানিক বাজারে প্রকাশ্যে জাটকা বিক্রি করতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার গোপিনাথপুর,কাঞ্চনপুর,হারুকান্দি ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন জেলে এবং ফরিদপুর থেকে আসা বেশ কিছু জেলে জানান, আমরা গত ৪মাস যাবৎ নিয়মিত পদ্মানদীতে আছি। জাল ফেললেই দশ-বারো কেজির মত ছোট সাইজের ইলিশ (জাটকা) জালে আটকায়। বড় ইলিশ নদীতে নেই। আমরা সেই জাটকা বাহাদুরপুর,আন্ধারমানিক,ধুলশুরা মাছের আড়তে সকাল বিক্রি করি। দুপুরেও নদীরঘাটে দুর দূরান্ত থেকে জাটকা কিনতে আসে অনেকেই।
মানিকগঞ্জ থেকে সকালে আন্ধারমানিক মাছের আড়তে মাছ কিনতে আসা মানিক জানান, বিভিন্ন রকমের মাছ কিনতে আসছিলাম। পেলাম না। এখন হাজার তিনেক টাকার জাটকা কিনে নিয়ে যাচ্ছি। প্রায় কেজি দশেকের মত হতে পারে।
ঝিটকা বাজারে প্রকাশ্যে জাটকা বিক্রি করা জেলে সুকু জানান, পদ্মায় যারা জাটকা মারে, তাদের কিছু না বলে আমাদের মত দেড় টাকার মাছ ব্যবসায়ীর উপর তারা খুব পারে। গোড়ায় গন্ডগোল থাকলে কোন কিছুই ভাল হয়না। পদ্মায় নিয়মিত অভিযান দিক, তাহলেই জাটকা মারা কমবে, বাজারে জাটকা আসবেনা।
আন্ধারমানিক বাজারে জাটকা বিক্রি করতে আসা এক ব্যবসায়ী জানান, আমগো কি দোষ। নদীতে জেলেদের নিষেধ আর নিয়মিত অভিযান করলে আমগো জাতীয় সম্পদ ইলিশ বাড়ত।
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নুরুল হক ইকরাম বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। গত দুইমাসে ৫/৬ অভিযান করে বিভিন্ন বাজার থেকে জাটকা জব্দ করেছি। জনবল সংকটে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে পারিনা। আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।