এবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতিকে সালাম না দেওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি ও হলের প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে যবিপ্রবির শহীদ মসীয়ূর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাঞ্জুরুল হাসান। এ ঘটনার পর তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা, ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল আহমেদ, ইসাদ হোসেন, আল আমিন, শেখ বিপুল হাসান ও মুশফিক, রাইসুল হক রানাসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও কয়েকজন।
এদিকে লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী মাঞ্জুরুল হাসান উল্লেখ করেছেন, ‘শুক্রবার রাতে আমি শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০১ নম্বর কক্ষ থেকে বের হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা হয়। সেসময় তাকে সালাম না দেওয়া এবং লুঙ্গি পরে তার সামনে চলাচলের অভিযোগে পরে আমাকে আমার কক্ষ থেকে ডেকে ৩০৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সভাপতির নির্দেশে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে আমার চিৎকারে হলের অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান।’
গতকাল শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) যোগাযোগ করা হলে মাঞ্জুরুল বলেন, আমার চোখে সমস্যা, রাতে ঠিকমত দেখতে পাই না। ওই দিন রাতে আমি যখন লুঙ্গি পরে বাইরে যাচ্ছিলাম, তখন ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তার কর্মীরা আমার সামনে পড়ে যায়।
পরে তারা আমাকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এরপর ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে আমি ক্ষমা চাই। এসময় ওদের মধ্যে একজন আমাকে বলেন- ভাইকে সালাম দিয়েছিস না কেন? কেন লুঙ্গি উঁচু করে পরেছিস? তারপর তারা আমাকে আবারও মারধর করেন।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ছাত্রাবাসে কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়নি। এদিন রাতে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং ফিশারিজ ও মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের কিছু ছেলে আমার কক্ষের সামনে জুনিয়রদের সঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদেরকে বুঝিয়ে রুমে পাঠায়। ক্যাম্পাস রাজনীতির গ্রুপিংয়ের বলি হিসেবে আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।
এদিকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. তানভীর ইসলাম বলেন, এদিন রাতে ঘটনাটি শুনে সহকারী প্রভোস্টদের নিয়ে ছাত্রাবাসে এসে দেখি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে শনিবার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।