, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ , ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


কুষ্টিয়ার আলোচিত মা-শিশুসহ ট্রিপল মার্ডার মামলায় পুলিশ কর্মকতার মৃত্যুদন্ড

  • আপলোড সময় : ১২-০২-২০২৪ ১০:৪২:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০২-২০২৪ ১০:৪২:৩৪ পূর্বাহ্ন
কুষ্টিয়ার আলোচিত মা-শিশুসহ ট্রিপল মার্ডার মামলায় পুলিশ কর্মকতার মৃত্যুদন্ড
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার বহুল আলোচিত মা-শিশুসহ ট্রিপল মার্ডার মামলার একমাত্র আসামী পুলিশ কর্মকর্তা সৌমেন রায়ের মৃত্যুদন্ড ও একলাখ টাকা জরিমানা দিয়েছে আদালত। রবিবার বেলা সাড়ে ৩টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমীন পলাতক আসামী সৌমেন রায়ের অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন। রায়ে মৃত্যুদন্ড ছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ২০২১ সালের ১৩জুন প্রকাশ্য দিবালোকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনাটি জেলা জুড়ে চা ল্য সৃষ্টি হয়েছিলো।

তবে নৃসংশ এই হত্যাকান্ডের মামলায় আদালত সর্বোচ্চ শাস্তিদন্ডের আদেশ দিলেও  মামলার বাদি হাছিনা খাতুন খুশি হতে পারছেন না বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি দাবি করেন, ‘মোটা টাকার বিনিময়ে তথ্য জালিয়াতি করে সৌমেনের উকিল হাইকোটে জামিন চেয়েছিলো বলে আদালত জামিন দিয়েছে। তার প্রমাণ হলো সৌমেন জামিনে বেড়িয়েই উধাও হয়ে গেছে। জজ আদালতে স্বাক্ষী শুনানীতে হাজির হয়নি আসামি’। ‘আমি এই মামলা সম্পর্কে ম্যালা লোকের সাথে কথা বলছি সবাই বলছে, এই মামলায় কোনোভাবেই জামিন হয় না। তাহলি কোর্ট জামিন দিলো কিভাবে’? ‘আমি চাই দ্রুত আসামি সৌমেন রায়কে গ্রেফতার করে আদালতের রায় কার্যকর করা হোক’।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ‘কুষ্টিয়া সদর থানার জিআর মামলা নং ২৯০/২১ যা কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন সেশন মামলা নং ১০৭৪/২১ দ:বি: ৩০২/৩৪। ২০২১ সালের ১৩ জুন বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের কাষ্টমস মোড়ে প্রকাশ্য দিবালোকে জনতা সমাগমস্থলে সংঘঠিত নৃসংশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ছিলো এটা। ধর্মান্তরিত না হয়ে অসম সম্পর্কের জেরে মা ও শিশুসহ একই ঘটনাস্থলে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে নিজের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রসহ (পিস্তল) বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে আটক হয়।   


পুলিশের এই উপসহকারী পুলিশ পরিদর্শক ও মাগুরা জেলার আসবা গ্রামের মৃত: সুনীল রায়ের ছেলে সৌমেন রায়কে(৩৪) রায়ের বিরুদ্ধে ঘটনার দিন রাতেই নিহত নারী আসমা খাতুন-এর(৩০) মা ও নিহত শিশু রবিনের (৬) নানী হাছিনা খাতুন বাদি হয়ে অপর নিহত যুবক শাকিলকে(২৩) হত্যার বিষয় উলে­খসহ চা ল্যকর ট্রিপল মার্ডারের অভিযোগ এনে পুলিশ সদস্য সৌমেন রায়কে একমাত্র এজাহার নামীয় আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন সৌমেন রায়। গ্রেফতারের পর কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন সৌমেন রায়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলা সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে একাধিকবার জামিনাবেদন করলেও তা নামঞ্জুর করেন আদালত। 

পরে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর উচ্চ আদালতে ক্রিমিন্যাল মিসকেস নং ৫৯৮২০/২২ এ বিচারপতি মো. সেলিম এবং মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের যৌথ বেে  জামিনাবেদন করেন কারাবন্দি সৌমেন রায়ের আইনজীবী এ্যাড. মোহাম্মদ রহিম উদ্দিন। এই জামিন শুনানীতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নী জেনারেল এসএম গোলাম মোস্তফা তারা, এএজি শেখ মো. মজু মিয়া এবং মো. হাফিজুর রহমান। শুনানী শেষে বিচারপতি দ্বয় ৬(ছয়) মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ আগষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ আদালত এ রায় ঘোষনা করেন।

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ‘কুষ্টিয়া সদর থানার চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারে জড়িত অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য সৌমেন রায়ের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে তিনি উচ্চ আদালত থেকে গত বছরের ৬ নভেম্বর ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিনাদেশ প্রাপ্ত হয়ে ২৪ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে বেলবন্ড দাখিল করে কারামুক্ত হন। এরপর থেকে অদ্যবধি আদালতে বিচারিক দিবসে হাজির না হয়ে পলাতক রয়েছেন সৌমেন রায়।
সর্বশেষ সংবাদ
ভারতে মসজিদ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা, গুলি করে তিন মুসলিমকে হত্যা

ভারতে মসজিদ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা, গুলি করে তিন মুসলিমকে হত্যা