কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার শ্বাসরোধে স্ত্রী হত্যার দায়ে মো: আলামিন (৪৪)নামে এক ভুয়া ক্লিনিকের ভুয়া ডাক্তারের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অর্থদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো: আশরাফুল ইসলাম আসামী আলামিনের উপস্থিতে এই রায় ঘোষণা করেন বলে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌসুলি এ্যাড. রফিকুল ইসলাম লালন।
সাজাপ্রাপ্ত হলেন- মিরপুর উপজেলার শাকদহ চর গ্রামের বাসিন্দা মো: আহাদ আলীর ছেলে মো: আলামিন হোসেন (৪৪)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টা থেকে ২৯ অক্টোবর রাত দেড়টার মধ্যে যে কোন এক সময়ে উপজেলার হালসা এলাকার ‘হালসা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ২য় তলায় আসামী তার স্ত্রী মোছা: শিউলি খাতুন (২৮) কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। সংবাদ পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারকালে নিহতের শারীরিক হতাহতের চিহ্ন দেখতে পায় এবং লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। এঘটনায় নিহতের পিতা শাকদহচরের বাসিন্দা শমসের আলীর ছেলে আশাদুল বাদি হয়ে ২৯ অক্টোবর,২০২২ তারিখে মিরপুর থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মো: আলামিন ও মোছা: জানেরা খাতুন ৩২ নামের দু’জনের নামোল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক জাফর আহমেদ ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারী ২জনের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌসুলি এ্যাড. রফিকুল ইসলাম লালন জানান, ‘বহুনারী আসক্ত আসামী আলামিনের সাথে স্ত্রী শিউলী খাতুনের দাম্পত্য কলহের জেরে শ^াসরোধ করে হত্যার দায়ে আনীত অভিযোগ ডাক্তারি পরীক্ষা সনদসহ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় আলামিনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬মাসের সাজার আদেশ দেন আদালত। এছাড়া অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আসামী জানেরা খাতুনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে বলে জানালেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি।
রায় ঘোষনার সময় আদালতে উপস্থিত মামলার বাদি নিহতের পিতা আশাদুল সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার মেয়ের জীবনের বিনিময়ে হলেও আরও অসংখ্য মেয়েরা এই নারী ভোগী আলামিনের প্রতারণা থেকে রক্ষা পাবে’।