আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সাত জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের ছয়টি আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন ৩১ জন। এরমধ্যে জাতীয় পার্টির ছয়জন, তৃণমূল বিএনপির দুই, স্বতন্ত্র দুই, বিএনএমের চার, জাসদের তিন, জাকের পার্টির এক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির দুই, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের এক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টর একজনসহ ২২ জনই জামানত হারিয়েছেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট কোনো প্রার্থী যদি না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-সদরের একাংশ) আসনে প্রার্থী ছিলেন চারজন; এরমধ্যে তিনজনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৯৪ হাজার ৬৭২। ভোট পড়েছে দুই লাখ ৮৫ হাজার ৪২৩টি। এ আসনে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর শাকিল জয় দুই লাখ ৭৮ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির জহুরুল ইসলাম তিন হাজার ১৩৯ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির জহুরুল ইসলাম, বিএনএমের সবুজ আলী ও জাসদের সাইফুল ইসলাম।
সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে প্রার্থী ছিলেন পাঁচজন। তার মধ্যে চারজনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৪ হাজার ৫০৭। মোট ভোট পড়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৫৫০টি। প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ হয় ২৪ হাজার ৬৯৩। তবে এ পরিমাণ ভোট পাননি চারজন প্রার্থী। এ আসনে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. জান্নাত আরা হেনরী এক লাখ ৮৪ হাজার ৮৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির আমিনুল ইসলাম পেয়েছেন চার হাজার ৫৮০ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির আমিনুল ইসলাম, জাকের পার্টির আব্দুল রুবেল সরকার, তৃণমূল বিএনপির সোহেল রানা ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্সের পার্টির সাদাকাত হোসেন খান বাবুল।
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে প্রার্থী ছিলেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে তিনজনই জামানত হাতিয়েছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ১৪ হাজার ৮৪৩। ভোট পড়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ১৫৮টি। এ আসনে নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এক লাখ ১৭ হাজার ৬৪২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র সাখাওয়াত হোসেন সুইট পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৭০৮ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো তিন প্রার্থী হলেন স্বতন্ত্র নুরুল ইসলাম, বিএনএমের গোলাম মোস্তফা ও জাতীয় পার্টির জাকির হোসেন।
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে প্রার্থী ছিলেন তিনজন। তাদের মধ্যে দুজনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৪৩ হাজার ৪৪০। ভোট পড়েছে দুই লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৭টি। প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ হয় ২৯ হাজার ২৪৫টি ভোট। এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দুই লাখ ২০ হাজার ১৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির হিল্টন প্রামাণিক সাত হাজার ৮৮ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। জামানত হারিয়েছেন জাসদের মোস্তফা কামাল বকুলও।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে প্রার্থী ছিলেন ছয়জন। তাদের চারজনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৯৮ হাজার ৬৬১। ভোট পড়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৭৩২টি। প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ হয় ১৯ হাজার ৪৬৬টি ভোট। এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল ৭৭ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস পেয়েছেন ৭৩ হাজার ১৮৩ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো চার প্রার্থী হলেন স্বতন্ত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিএনএমের আব্দুল হাকিম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নাজমুল হক ও জাতীয় পার্টির ফজলুল হক।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে প্রার্থী ছিলেন আটজন। তাদের ছয়জনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৫৬ হাজার ৩৭৭। মোট ভোট পড়েছে এক লাখ ৬৯ হাজার ৭৮৬ টি। এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চয়ন ইসলাম এক লাখ ২৮ হাজার ৮৯০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হালিমুল হক মিরু পেয়েছেন ২৫ হাজার ৬৭৬ ভোট। এ আসনে জামানত হারানো ছয় প্রার্থী হলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কাজী আলামিন, তৃণমূল বিএনপির তারিকুল ইসলাম, বিএনএমের মোহাম্মদ শামীম, জাতীয় পার্টির মোক্তার হোসেন, জাসদের মোজাম্মেল হক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রেজাউল রশিদ খান