নাজমুল হাসান নিরব,ফরিদপুর প্রতিনিধি: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারনায় দীর্ঘ সাত বছর পর ফরিদপুর এসেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে স্বপ্নে বুক বাঁধছে ফরিদপুরবাসী। এই আগমনের মাধ্যমেই ফরিদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের দাবি পূরণ হবে বলে আসা স্থানীয়দের।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠেই বক্তব্য রেখেছিলেন। সে সময় এ অঞ্চলের মানুষের চাওয়া ছিল ফরিদপুরকে বিভাগ হিসেবে ঘোষণা পাশাপাশি এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন।
তবে দীর্ঘদিনেও এসব দাবি পূরণ না হলেও এবার আসায় বুক বেঁধেছেন প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তব্যে ফরিদপুরবাসীর জন্য বড় ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা সবার।
ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ফরিদপুরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা এই ফরিদপুরে অনেক গুণী ব্যক্তিদের জন্ম ও আনাগোনা ছিল এবং আছে। অনেক আউলিয়া-দরবেশ, রাজনীতিক, পুণ্যাত্মার আবাসভূমি হিসেবে এ অঞ্চল অত্যন্ত সুপরিচিত।
আওয়ামী লীগের ক্ষমতায়নে বেশ উন্নয়ন হয়েছে পদ্মা পাড়ের এ জেলায়। ফোর লেন রাস্তাসহ আধুনিকতার ছোঁয়ায় নতুন করে সেজেছে শহর। আর এ জেলাকে বিভাগে বাস্তবায়নের দাবি ১৯৮৫ সাল থেকেই। তাই দীর্ঘ দিনের এই চাওয়ার বাস্তবতা শুনতে প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তব্যের দিকে নজর থাকবে সবার। ফরিদপুরে বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি গ্যাস-সংযোগ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ ও পাট নির্ভর শিল্পাঞ্চলও গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের।
জেলার একাধিক ছাত্রনেতা বলেন, আমরা পদ্মা সেতু না থাকায় অনেক পিছিয়ে ছিলাম। এখন আমাদের অর্থনৈতিক ও আর্থ সামাজিক সব দিক উন্নত হচ্ছে। যোগাযোগের দিক দিয়েও আমরা একটি লোকাল হাব। তবে আমাদের এই ফরিদপুরের ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। এলাকার শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পড়াশুনা করছে। তাই আমাদের দাবি এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক। আর প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দিবে আশা করি।
স্থানীয় রাজনীতিবিদরা জানান, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার কমতি নেই। তবে আধুনিক ও ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড় অভাব এ অঞ্চলে। উন্নয়নে আমরা অনেক খুশি তবে এসব উন্নয়ন পূর্ণতা পাবে এই জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে। পাশাপাশি পদ্মার এপারের বিভাগ যেন ফরিদপুর নামেই হয় সে আশা রাখি।
এদিকে বেলা ৩টায় ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জনসভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। সে লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সেরেছে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী আমেজে তেমন ব্যানার ফেস্টুন দেখা না গেলেও, উচ্ছ্বাস বইছে সবার মাঝে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক জানান, আমাদের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে প্রস্তুত ফরিদপুরবাসী। আমিও আশা রাখি এবার এ অঞ্চলের মানুষের সব দাবি পূরণ করবে নেত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে বিশেষ জেলা জুড়ে নিরাপত্তা জোরালো করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম (পিপিএম)।