ফেনী প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও ডামি নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের জনমত তৈরির লক্ষ্যে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়। ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় ফেনী জেলা বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব ও আবু তালেব। তারা শহরের ইসলামপুর রোড, তাকিয়া রোড সহ বড় বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মাঝে প্রচারপত্র বিতরণ করেন।
এ সময় তাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত) আহবায়ক অধ্যাপক এম এ খালেক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম আহবায়ক ইয়াকুব নবী, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, ফেনী সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব এডঃ মেজবাহ উদ্দিন ভূঞাঁ। এ ছাড়া সদর উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
লিফলেট বিতরণ শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আজকে জবর দখলদার সরকার, এই ভোট চোর সরকার ২০১৪ সালে যে ভাবে একতরফা নির্বাচন করেছিল, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতেই করে নিয়েছিল এ নিশি রাতের সরকার। ঠিক সে ভাবে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি আবারও একই ধরনের নির্বাচনে করতে চাচ্ছে। আমরা এ সভা থেকে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের জনগণ এ প্রহসনের নির্বাচন মানে না। আগামী নির্বাচন করতে হলে এ ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রেখে বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আগামী নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারই ঠিক করবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সে কমিশনের অধীনে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শামীম আরো বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তিনি অসুস্থ। আমরা বলতে চাই বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়নি বরং গণতন্ত্রকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আজকে আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অন্যায় ভাবে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ফেনীতেও বিএনপির আহবায়ক সহ অনেক নেতাকর্মীকে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। এমনি ভাবে সারাদেশে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা আজকের সভা থেকে কারাবন্দিদের মুক্তির দাবী করছি না, আমরা এ ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে বেগম খালেদা জিয়া সহ সকল রাজবন্দিদের মুক্ত করে আনবো। তিনি আরো বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের যে পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউ রাজপথ ছেড়ে ঘরে যাবো না।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সামনে আমাদের আরো কঠিন আন্দোলন আসছে। বিগত দুইমাস আপনারা যে ভাবে আরামের ঘুম হারাম করে জীবনবাজি রেখে রাজপথে আন্দোলন করেছেন আপনাদের কে সাধুবাদ জানাই। সামনের যে আন্দোলন গুলো আসছে এ অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা এ ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের পতনের ঘন্টা বাজিয়ে দিব। আপনারা এ জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। আগামী দিনেও আপনারা রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাবেন। জেলা বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত) আহবায়ক প্রফেসর এম এ খালেক বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি প্রহসন, লুটপাট এবং শেখ হাসিনার তামাশার নির্বাচনের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করে যাচ্ছি রাজপথে। ফেনী জেলা বিএনপির নেতা কর্মীদের জীবন থাকতে ফেনীর কোন কেন্দ্রে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশের মানুষ কোন নির্বাচন করতে দিবে না। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা রাজপথে যে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এবং যে বীরত্ব ও সাহসের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন আপনাদের নাম বীরের খাতায় উঠে যাবে।
অপর দিকে মঙ্গলবার ২৬ জানুয়ারি সকালে ফেনীর সোনাগাজী পৌর শহরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টুর নেতৃত্বে এ লিফলেট বিতরণ করা হয়। এ সময় সোনাগাজী পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমাম উদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আবুল মঞ্জুর সবুজ, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নুর, জেলা সমবায় দলের সভাপতি হোসেন আহম্মদ, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাবেদসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক-দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জামাল উদ্দিন সেন্টু জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা আসন্ন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। অন্যকেও যেতে না বলুন। আপনারা এ নির্বাচন বর্জন করুন। অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমেই এ সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা হবে।