তথ্য জানতে গিয়ে পুলিশের বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন সাভারের সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম। এসময় নিজের পরিচয় দিলেও মারধর থেকে রক্ষা পাননি তিনি। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী সাংবাদিককে মাদকসেবী হিসেবেও অপবাদ দেন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা।
এমন অভিযোগ উঠেছে সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির ও কনস্টেবল নাজমুলসহ তাদের দুই সোর্সের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি বুধবার রাতে সাভার সদর ইউনিয়নের চাপাইন তালতলা মহল্লায়। ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম ইংরেজি নিউ নেশন পত্রিকার সাভার প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গত রাতে সাভার সদর ইউনিয়নের চাঁপাইন তালতলা এলাকায় বাসার পাশের দোকানে বসেছিলাম। প্রতিবেশী এক নারী কান্নাকাটি করে বলেন, তার বাসায় স্বামীকে ধরতে পুলিশ এসেছে।
ৃ
স্থানীয় জামানসহ ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকে ছিলেন। আমাদের দেখামাত্র খুব খারাপ আচরণ শুরু করেন কনস্টেবল নাজমুল। এসময় নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তার কলার ধরে মুখে ঘুষি মারতে শুরু করেন।
এসআই আল মামুন কবির আমাকে ধাক্কা দিয়ে আইডি কার্ড দেখতে চান। আমি ভিজিটিং কার্ডটা হাতে দেই। এবার তিনি আমাকে মাদকসেবী হিসেবে অপবাদ দেন। অনেক অনুরোধ করেছি, ভাই আমি এ ধরনের না। বাসায় চলেন ও খোঁজ নিয়ে দেখেন।
আমাকে প্রয়োজনে থানায় নিয়ে চলেন। কিন্তু এভাবেই মারধর করবেন না। একপর্যায়ে আমার বাসায় এসে তারা আইডি কার্ড দেখেন। ইতিমধ্যে আমার দুই একজন সহকর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পরে এসআই ও কনস্টেবল সরি বলে চলে যান। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরি।
সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, আমার ওপর এমন অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেব। এর আগে আমি মোবাইলে পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারা এলাকায় সাক্ষী নিলেও সত্যতা পাবেন।
এ বিষয়ে এসআই আল মামুন কবির মুঠোফোনে বলেন, কনস্টেবল নাজমুল হয়তো না বুঝে করে ফেলেছেন। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমার সঙ্গে কিছু ঘটেনি। ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন ঘটনার জন্য সরিও বলেছি সাংবাদিক ভাইকে।
প্রত্যক্ষদর্শী জামান বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিবেশী সজল নামে শ্রমিকের বাসায় পুলিশ সদস্যরা যান। এই খবর পেয়ে সাংবাদিক মনিরুলসহ সেখানে যাই। সেখানে পুলিশরা আমাদের পরিচয় জানতে চান ও চলে যেতে বলেন। আমরা একটু দূরে সরে যাই। এর মধ্যে সজলকে যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে আমাদের কাছে এসে কনস্টেবল নাজমুল হঠাৎ মনিরুল ভাইয়ের কলার ধরেন। সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তাকে ছাড়েনি। উল্টো মারধর শুরু করে।
যোগাযোগ করা হলে সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ভুল বোঝাবুঝি যা হয়েছে, সমাধানও হয়ে যাওয়ার কথা।